Home খেলা স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে জার্মানির বিধ্বংসী জয়

স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে জার্মানির বিধ্বংসী জয়

20
0
SHARE

গত তিনটি মেজর টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করেছে জার্মানি। আছে স্বাগতিক হওয়ারও চাপ। ওসব অতীত আর মাঠের বাইরের ইস্যুকে মাথায় নেয়নি তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা। বাছাইয়ে দারুণ পারফরম্যান্স করে আশার আলো জ্বালিয়ে ইউরোপ সেরার মঞ্চে যোগ দেওয়া স্কটল্যান্ডকে পাত্তাই দিলো না তারা। ১০ জনের দলের বিপক্ষে ৫-১ গোলের বিধ্বংসী জয় পেয়েছে জার্মানি।

ঘড়ির কাঁটা তখনও এক মিনিট ছুঁতে ৬ সেকেন্ড বাকি। বুক ফুলিয়ে মিউনিখ ফুটবল অ্যারেনায় নামা স্কটল্যান্ডকে হুঁশিয়ারি বার্তা পৌঁছে দেয় জার্মানি। মাঝমাঠ থেকে অ্যান্তনিও রুদিগারের লম্বা ক্রস বুক দিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন ফ্লোরিয়ান উইর্টজ। তারপর বাঁ পায়ের শট নেন লক্ষ্যে, স্কটিশ গোলকিপার আনগুস গুনের মুখে লেগে বল দিকভ্রষ্ট হয়। অবশ্য ততক্ষণে অফসাইডের বাঁশি বেজে গেছে।

গোল না খেলেও স্কটল্যান্ডের মনোবলে বড় ধাক্কা লেগেছিল। রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা একটু বেশিই জায়গা রাখছিলেন। তারই সুযোগ নিয়ে ১০ মিনিটে এগিয়ে যায় জার্মানি। ইলকে গুন্দোয়ানের লম্বা ক্রসে বক্সের ডান প্রান্ত থেকে বল বাড়িয়ে দেন জোশুয়া কিমিখ। ডিবক্স থেকে শক্তিশালী শট নেন উইর্টজ। গুন ডানহাত বাড়িয়ে বল ঠেকিয়েছিলেন, কিন্তু ধরে রাখতে পারেননি। বল বাঁ পাশের পোস্টে লেগে জালে জড়ায়। বুন্দেসলিগার মৌসুম সেরা ফুটবলারের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।

১৯৭২ সালে গার্ড মুলার ও ১৯৮০ সালে কার্ল-হেইঞ্জ রুমেনিগের পর তৃতীয় জার্মান খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোর প্রথম গোল করলেন বেয়ার লেভারকুসেনের জার্সিতে বুন্দেসলিগা জয়ী উইর্টজ। এছাড়া ২১ বছর ও ৪২ দিন বয়সী মিডফিল্ডার এই টুর্নামেন্টে জার্মানির সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতাও হলেন।

ব্যবধান দ্বিগুণ করতে বেশি সময় লাগেনি জার্মানদের। ১৯ মিনিটে গুন্দোয়ানের পাস ধরে বক্সে ঢুকেছিলেন কাই হ্যাভার্জ। ছোট বক্সের সামনে থেকে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের বাধার মুখে ব্যাকপাস দেন তিনি। জামাল মুসিয়ালা বল পায়ে রেখে ঠাণ্ডা মাথায় উঁচু শটে জাল কাঁপান।

২৪ মিনিটে মুসিয়ালা বক্সের ঠিক বাইরে ফাউলের শিকার হন। রেফারি ক্লেমন্ত তুর্পিন পেনাল্টির বাঁশি বাজান। তবে স্কটিশ খেলোয়াড়দের দাবির মুখে পেনাল্টি চেক করেন, আগের সিদ্ধান্ত পাল্টে ফ্রি কিক দেন তিনি। ১৮ মিটার দূরে থেকে নেওয়া হ্যাভার্জের ফ্রি কিক সহজে রুখে দেন স্কটল্যান্ড কিপার।

হ্যাভার্জ ৩৩ মিনিটে লক্ষ্যভেদ করলেও বল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সময় হাতে লাগলে হতাশ হতে হয় তাকে। আর্সেনাল ফরোয়ার্ড বিরতিতে যাওয়ার আগে ঠিকই ব্যবধান ৩-০ করেন। গুন্দোয়ানের হেড গুন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। ফিরতি শট নিতে গিয়ে রায়ান পোর্টিয়াসের বিপজ্জনক ট্যাকলের শিকার হন গুন্দোয়ান। রেফারি পেনাল্টি চেক করে জার্মানির পক্ষে রায় দেন। স্পট কিক থেকে হ্যাভার্জ করেন দলের তৃতীয় গোল।

৪০ বছর পর ইউরোর গ্রুপ পর্বে প্রথম দল হিসেবে হাফটাইমের আগে তিন গোল করার কীর্তি গড়লো জার্মানি। এর আগে ১৯৮৪ সালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ফ্রান্স সমান সংখ্যক গোল করেছিল।

বিরতির পরও স্কটিশরা কোনও প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। ৬৩ মিনিটে হ্যাভার্জের বদলি হয়ে মাঠে নামার পাঁচ মিনিট যেতেই রকেট গতির শটে জাল কাঁপান নিকলাস ফুলক্রুগ। সতীর্থের ব্যাকপাস থেকে বল পেয়েই ডানপায়ের উঁচু কোনাকুনি শট নেন, গুন ঠেকানোর কোনও সুযোগ পাননি।

৭৬ মিনিটে ফুলক্রুগ আরেকবার জালে বল জড়ান। থমাস মুলারের বাঁকানো ক্রস ধরে তার শট গোলকিপারের গায়ে লেগে লক্ষ্যভেদ হয়েছিল। কিন্তু তাকে হতাশ হতে হয়। মুলার বল ভাসানোর মুহূর্তে অফসাইডে ছিলেন ফুলক্রুগ।

স্কটল্যান্ড মূল সময় শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে এগিয়ে যায়। রুদিগার করেন আত্মঘাতী গোল। ফ্রি কিক থেকে স্কট ম্যাককেন্নার হেড বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজের জালেই বল জড়ান তিনি।

জয়ের ব্যবধান চারেই নিয়েছে জার্মানি। এমেরি কান তিন মিনিটের ইনজুরি টাইমের শেষ মুূহূর্তে করেন দলের পঞ্চম গোল। ছোট ডি বক্সের সামনে থেকে উঁচু শটে গোলপোস্টের ডান দিক দিয়ে জালে বল জড়ায়।