Home জাতীয় আদালতের সকল কার্যক্রম ডিজিটাল করা জরুরি : রাষ্ট্রপতি

আদালতের সকল কার্যক্রম ডিজিটাল করা জরুরি : রাষ্ট্রপতি

104
0
SHARE

আদালতের সকল কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু ‘কোর্ট অব রেকর্ড’ সেহেতু এর সকল নথি এবং মামলা দায়ের থেকে রায় ঘোষণা পর্যন্ত সব কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি।

আজ শনিবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস ২০২০ উপলক্ষে বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশ, জনগণ ও সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে বিচারক, আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট সকলে তাদের মেধা ও মনন প্রয়োগের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবেন।

তিনি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।’ তাই, মনে রাখতে হবে একজন বিচারপ্রার্থীর ন্যায়বিচার পাওয়া তার অধিকার। আর নাগরিকের সে অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এখানে দয়া বা অনুকূল্যের কোনো বিষয় নেই।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট পবিত্র সংবিধানের অভিভাবক। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বিচারপ্রার্থীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ৫ম ও ৭ম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। নানা বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড ও যুদ্ধপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন সুসংহত করতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে।

জাতির ক্রান্তিকালে যখনই প্রয়োজন হয়েছে, তখনই সুপ্রিম কোর্ট মানুষের মৌলিক মানবাধিকার ও সংবিধানকে রক্ষা করেছে এবং করে যাচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন. আইনজীবীরা বিচার ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য অংশ। আইনজীবীদের সহায়তা ছাড়া বিচারের কাজ কিছুতেই অগ্রসর হতে পারে না।

তিনি বলেন, আমি নিজে একজন আইনজীবী হিসেবে জানি, বিচার কাজ কত কঠিন ও জটিল। বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় একজন বিচারককে কতটা পরিশ্রম করতে হয়। সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং বিচারকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচারকদের খেয়াল রাখতে হবে মামলার রায় হওয়ার পর রায়ের কপি পাওয়ার জন্য বিচারপ্রার্থীদের যেন আদালতের বারান্দায় দিনের পর দিন ঘোরাঘুরি করতে না হয়।

দেশের আদালতে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ও দুর্গত বিচারপ্রার্থীরা মামলার শুরু থেকে নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত সকল আইনগত সহায়তা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থক, বিদেশি বন্ধু, যুদ্ধাহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যসহ সর্বস্তরের জনগণকে শ্রদ্ধা জানান।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, এমপি, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিবৃন্দ, অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, আইনজীবীবৃন্দ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ এ সময় বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাস নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।