Home জাতীয় যেসব খাতে ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

যেসব খাতে ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

62
0
SHARE

অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক সূচকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্ট খাতের গুরুত্বপূর্ণ ১৬ সূচকের মধ্যে ভারতের চেয়ে ১৪টিতে ও পাকিস্তানের চেয়ে সবগুলোতে এগিয়ে বাংলাদেশ।

বুধবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

‘বাংলাদেশ ইন কম্পরেটিভ পার্সপেক্টিভ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেন বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. বিনায়েক সেন।

সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৩০ বছরে ভারত-পাকিস্তানের থেকে নানা খাতে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। উৎপাদন খাতে অগ্রগতির (তৈরি পোশাক, চামড়া শিল্প, কুটির শিল্প) হার, মাথাপিছু আয়, নারীর ক্ষমতায়ন, নগরায়নসহ নানা খাতে তাদেরকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।

গড় আয়ু, বয়ষ্ক শিক্ষার হার, মোট জন্ম হার, শিশু মৃত্যু হার, খর্বকার হার, নারী দারিদ্র্যতার হার, গড় দারিদ্র্যতার হার, স্কুলে মেয়ে শিশুর হার, মাধ্যমিক শিক্ষায় মেয়েদের হার সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে।

এছাড়া কর্মসংস্থানে নারীর উপস্থিতির হারে এগিয়ে বাংলাদেশ। তবে খাতগুলোর মধ্যে কেবল জিএনআই পার ক্যাপিটা ও এক্সপার্ট ভ্যালু রেশিওতে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে উপরোক্ত সব খাতেই বাংলাদেশের থেকে পিছিয়ে পাকিস্তান।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন তার গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপ করে বলেন, করোনা মহামারি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পিছিয়ে দিয়েছে। বিনিয়োগ ও বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি করোনার আগের তুলনায় কমেছে। অব্যাহতভাবে চলতি হিসেবে ঘাটতি আছে। তারপও রিজার্ভ বাড়ছে। তবে আইএমএফ’র মতে রিজার্ভের হিসাবে গড়মিল রয়েছে। বৈদেশিক ঋণ বিষয়ে তেমন ঝুঁকি নেই তবে ঋণ নিয়ে ভোগ বিলাসে ব্যয় করা যাবে না। উৎপাদনশীল খাতে ব্যয় করতে হবে। এছাড়া আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে তেলের দাম বৃদ্ধি এবং পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা বহিঃস্থ ঝুঁকি তৈরি করেছে। বাজেট সংক্রান্ত ঝুঁকি রয়েছে। ভ্যাকসিন সরবরাহে বাজেট সহায়তা কমছে। এছাড়া বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট মেগা প্রকল্পগুলোর ব্যয় বাড়ছে। এটিও ঝুঁকি তৈরি করছে। এছাড়া রাজনৈতিক প্রভাবে অর্থনীতিতে সম্ভাব্য উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

সম্মেলনে অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বলেন, গত ৫০ বছরে দেশে দারিদ্র্য ব্যাপক কমেছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে বৈষম্যও বেড়েছে। বৈষম্য বেড়ে গেলে কর ফাঁকি দিয়ে বিদেশে টাকা পাচারও বেড়ে যায়। যেসব দেশের কর কম, সেসব দেশেই টাকা চলে যায়। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এখন রাজনৈতিক সমস্যা। স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত রেমিট্যান্স ও রপ্তানি অর্থনীতিতে বড় অবদান রেখেছে। রেমিট্যান্স গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। তিনি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করতে গবেষণার ওপর জোর দেন।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান বলেন, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও অনেক ক্ষেত্রে অপশাসন রয়েছে। সুশাসনকে পাশ কাটানো হয়েছে। এসব কারণে রানা প্লাজা, তাজরীন ট্র্যাজেডির মতো ঘটনা ঘটেছে।

তিনি স্বাধীনতার পর দেশের উন্নয়নে বেসরকারি সংস্থার ভূমিকার প্রশংসা করেন। এসব উন্নয়ন সংস্থাকে তিনি ‘সামাজিক উদ্যোক্তা’ হিসেবে অভিহিত করেন। এসব এনজিও গ্রামীণ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। গ্রামীণ ব্যাংক পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী সংস্থা। আর ব্র্যাক বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও। এগুলো বাংলাদেশের এনজিও খাতের সাফল্য নির্দেশ করে।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা কনফারেন্সে অংশ নেন।