Home জাতীয় এক শিক্ষকে চলছে উচ্চ বিদ্যালয়, ছাত্রীও একজন

এক শিক্ষকে চলছে উচ্চ বিদ্যালয়, ছাত্রীও একজন

69
0
SHARE

তিন বছর আগে শ্রেণিকক্ষ না থাকায় গাছের নীচে বসে স্কুলের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতো। সেই খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ১৫ লাখেরও বেশি টাকায় ছাদসহ তিনটি পাকা শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করা হয়।

সেখানে বসানো হয় নলকূপ। মিড-ডে মিলের ব্যবস্থাও করা হয়। তখন বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল শতাধিক এবং শিক্ষক ছিলেন পাঁচজন। সেই স্কুলে বর্তমানে খাতা-কলমে চারজন ছাত্রছাত্রী থাকলেও উপস্থিত থাকে মাত্র একজন। শিক্ষকও সেই আছেন একজন। কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নয়, এমনই চিত্র ভারতের দেগঙ্গার আমুলিয়া পঞ্চায়েতের বেলগাছিয়া জুনিয়র হাইস্কুলের।

জানা গেছে, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির এই বিদ্যালয় থেকে এরই মধ্যে অবসর নিয়েছেন চারজন শিক্ষক। নতুন করে আর শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। মাত্র একজন শিক্ষকের হাতে না ছেড়ে বাধ্য হয়ে সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাদের অন্যত্র ভর্তি করেছেন অভিভাবকরা।

স্থানীয়রা বলছেন, ২০১২–২০১৩ শিক্ষাবর্ষে বেলগাছিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ‘জুনিয়র হাইস্কুলের’ অনুমোদন পায়। চালু হয় পড়াশোনা। সেই সময় বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ১২৪ জন।

কিন্তু জুনিয়র স্কুলের অনুমোদন মিললেও বাড়তি শ্রেণিকক্ষ তৈরি হয়নি। ফলে প্রাথমিক স্কুলের সামনে গাছের নীচে পলিথিন বিছিয়ে চলত জুনিয়র স্কুলের ক্লাস। ২০১৬ সালে সেই ছবি ও খবর প্রকাশ হওয়ার পরে শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তৈরি করা হয় শ্রেণিকক্ষ। নতুন ভবনে টেবিল, বেঞ্চ, আলো-পাখা সব কিছুরই ব্যবস্থা করা হয়।

আর বর্তমানে স্কুলের শ্রেণিকক্ষের এক কোণে সারি দিয়ে পড়ে রয়েছে নতুন বই। মন্টুকুমার পাল নামে একজন শিক্ষক উপস্থিত। তিনি ক্লাস নেন স্কুলের একমাত্র ছাত্রী, সপ্তম শ্রেণির জেসমিনা পরভিনের। মন্টু বলেন, অবসরের পরে আর নিয়োগ না হওয়ায় ২০১৬ সাল থেকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে কমতে চারে এসে ঠেকেছে।

মিড-ডে মিল রান্নার কাজে যুক্ত মালেকা বিবি বলেন, একজনের জন্য রান্না করে কয়দিন বেতন পাব, জানি না।

ওই স্কুল থেকে ছাড়িয়ে সন্তানকে অন্যত্র ভর্তি করেছেন জুলফিকার আলি। তিনি বলেন, সরকার শ্রেণিকক্ষ তৈরি করেছে। অথচ মজার ব্যাপার হলো, তাতে পড়ানোর কেউ নেই।

আরেক অভিভাবক বলেন, বোড়ামারি, বাওরাটি, বেলপুর ও বেলেডাঙা এলাকার মধ্যে এটিই একমাত্র জুনিয়র হাইস্কুল। বাধ্য হয়ে তিন কিলোমিটার দূরে রায়পুর হাইস্কুলে ছেলে-মেয়েদের ভর্তি করতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে দেগঙ্গা শাখার বিদ্যালয় পরিদর্শক সানাওয়াজ আলম বলেন, শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় জুনিয়র হাইস্কুলগুলোও অতিথি শিক্ষকদের দিয়ে চালাতে হয়। অতিথি শিক্ষকও সব সময়ে পাওয়া যায় না। আর এই স্কুলে এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় শিক্ষক নিয়োগ আর হবে কিভাবে?