Home Blog Page 3542

তামিমের বিকল্প নিয়ে চিন্তা নেই : সাকিব

0

ছুটি কাটিয়ে দেশে ফিরে জাতীয় দলের সঙ্গে পুরোদমে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার নেতৃত্বে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ পাবে না বিশ্রামে থাকে দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে। তার না থাকা মানে দলে বড় একটা ঘাটতি। তবে বাঁহাতি এই ওপেনারের বিকল্প নিয়ে কোনো দুর্ভাবনা নেই টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের।

আসলে একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থ হতে থাকা তামিমকে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছিলেন সাকিবই। বন্ধুর কথাতেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট এবং আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে ছুটি নেন তামিম। ওপেনিংয়ে তামিমের বিকল্প হিসেবে কে বা কারা সুযোগ পেতে পারে এমন একটা আলোচনা দলে সবসময়ই চলে। এর বাইরে ক্রিকেটপ্রেমী আর সাংবাদিকদেরও আছে এটা জানার আগ্রহ। যে কারণে সাকিবকে আজ এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হলো।

মিরপুরে বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে জায়গাগুলো ফাঁকা হয় কিংবা ফাঁকা থাকে বা যে জায়গাগুলো নিয়ে আমরা সচেতন থাকি। সেই জায়গাগুলো নিয়ে আমরা সব সময় আলাপ-আলোচনা করি। সবাই আলাপ-আলোচনা করার পর আমরা একটা সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছাই যে, এই খেলোয়াড় এই এই কারণে এই পজিশনে সুইটেবল হবে। তারপর আমরা আসলে নির্বাচন করি। জায়গা দেওয়া না দেওয়া বড় কথা না।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি দল কিন্তু খেলতে নামে জেতার জন্য। দলগুলো যখন ম্যাচ খেলতে যায় তখন কিন্তু এটা চিন্তা করে না যে, আমরা খেলোয়াড় তৈরি করতে যাচ্ছি কিংবা নতুন খেলোয়াড় দেখার জন্য যাচ্ছি। হয়তো নতুন খেলোয়াড়ও দেখা হতে পারে, কিন্তু দিনশেষে লক্ষ্য থাকে ম্যাচ জেতার। আমরাও ওই লক্ষ্য নিয়েই খেলব। এর জন্য যদি নতুন খেলোয়াড় নেওয়ার দরকার হয়, তাহলে নতুন খেলোয়াড় নেব। যদি দেখি অভিজ্ঞদের পারফর্ম করার সম্ভবনা আছে তাহলে ওরাই খেলবে।’

ছুটির আবেদন করতে এসে হঠাৎ জ্ঞান হারালেন সাধনা

0

জামালপুরের ডিসির সাথে আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়া অফিস সহায়ক সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা তার কর্মস্থলে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন ।

আজ সোমবার সকালে জামালপুর জেলা প্রশাসকের কর্মস্থলে আসার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ওই নারী । সে সময় ওই নারীর হাতে শারীরিক অসুস্থতার কারনে একটি ছুটির আবেদন পত্র দেখা যায় । পরে অবশ্য কিছুক্ষনের মধ্যে তিনি জ্ঞান ফিরে পান।

আবেদনে অফিস চলাকালীন সময়ে অসুস্থ বোধ করায় আগামীকাল ২৭ আগস্ট থেকে ৩ দিনের ছুটির কথা উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসকের গোপনীয় শাখার অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত ওই নারী সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই কেউ কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই দ্রুত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ত্যাগ করেন ওই নারী।

গত বৃহস্পতিবার থেকে জামালপুরের ডিসি আহমেদ কবীরের সাথে ওই নারী অফিস সহায়কের আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে জামালপুরসহ সারাদেশে নিন্দার ঝড় উঠে। এ ঘটনায় গতকাল জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরকে ওএসডি করা হলেও ঘটনায় সাথে জড়িত ওই নারীর বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন জামালপুরের মানুষ।

অফিস সহায়কের ছুটির আবেদন পত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) রাজীব কুমার সরকার বলেন, সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা নামের ওই অফিস সহায়কের ছুটির আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন জেলা প্রশাসক কর্মস্থলে যোগদান করে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

এ ঘটনায় মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের গঠিত ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত সাপেক্ষে ওই অফিস সহায়কের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

গণপিটুনি বন্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না: হাইকোর্টের রুল

0

রাজধানীর বাড্ডায় গণপিটুনিতে নিহত রেনুসহ অন্যান্যদের জীবন বাঁচাতে সরকারের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

এছাড়া গণপিটুনি বন্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। তিন মাসের মধ্যে রেনুসহ অন্যান্য হত্যার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গত জুলাইয়ে বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্তানের ভর্তির বিষয়ে জানতে গিয়েছিলেন তাসলিমা বেগম রেনু। সেখানেই ছেলেধরা গুজব তুলে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া সাভার নেত্রকোনাসহ বেশ কয়েক জায়গায় ছেলেধরা গুজব তুলে আরও কয়েকজনকে হত্যা করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান

0

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলার অবিসংবাদিত এ নেতা বাঙালির বৈষম্য ও বঞ্চনার ইতিহাস গভীরভাবে অনুভব করতে পেরে আজীবন তাদের মুক্তির জন্য লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন। সোমবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদ সচিবালয় আয়োজিত জাতির পিতার ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০১৯ উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
স্পিকার বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র উপহার দিয়ে গেছেন। বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু তার জীবন-যৌবনের বড় অংশ কারাগারে কাটিয়েছেন। তিনি ছিলেন অকুতোভয়, নির্লোভ ও নির্মোহ। অন্যায়ের কাছে কখনও মাথা নত করেননি। মামলা, জেল, জুলুম ও মৃত্যুভয় তাকে লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। ফাঁসির মঞ্চে গিয়েও তিনি আপোস করেননি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে মানুষকে ভালোবাসতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন জনগণকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে না পারলে অধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা উন্নয়ন কিছুই সম্ভব নয়। জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনই ছিল বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের একমাত্র দর্শন।
স্পিকার বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বজন হারানোর ব্যথা ভুলে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। এখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সব সূচকে উন্নয়নের রোল মডেল।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা তোফায়েল আহমেদ, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, হুইপ ইকবালুর রহিম, আতিউর রহমান আতিকসহ সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

শৃঙ্খলা ভাঙায় ওয়ারীর ডিসি সাময়িক বরখাস্ত

0

শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করায় রাজধানীর ওয়ারীর ডিসি ইব্রাহিম খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন দেয়া হয়।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিভাগের পুলিশ-১ অধিশাখার সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিনের সাক্ষরিত এ আদেশে বলা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা সমীচীন মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় এতদ্বারা চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

আদেশে আরো বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত থাকবেন এবং প্রচলিত বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা পাবেন।

অফিস-আদালত ও প্রতিষ্ঠানে লার্ভা পেলে জরিমানা : আতিকুল

0

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, জনগণ সচেতন হলে এডিস মশা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। বাসাবাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে না, কিন্তু অফিস-আদালত ও প্রতিষ্ঠানে লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে। এখন সিটি করপোরেশনের প্রায় তিন হাজার ছয় শ কর্মী মাঠে কাজ করছে।

আজ সোমবার দুপুরে নুরজাহান রোড এডিস মশা নির্মূলে চিরুনি অভিযানকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মেয়র আতিকুল বলেন, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য। সবাই মিলে পরিষ্কার করলে আমার জন্য সুবিধা হয়। আমি মনে করি আমরা সবাই এই ঢাকা শহরে থাকবো। শহরকে ভালোবেসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবো আমরা সবাই।

অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মনসুর হোসেন, অঞ্চল ৫ এর নিবার্হী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন, সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মৌসুমী বাইন হীরা, ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টুসহ আরো অনেকে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুলের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী কাল

0

আগামীকাল ১২ ভাদ্র। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শোকাবহ ঘটনার এক বছর পর ১৯৭৬ সালের শোকের মাসেই এদিনে শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। এখানেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধি প্রাঙ্গণে গমন, পুষ্পার্পণ এবং ফাতেহা পাঠ ও পরে কবির মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা। বাংলা একাডেমি কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একক বত্তৃতার আয়োজন করেছে। বিকাল ৪টায় এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কর্মসূচিত অংশ গ্রহন করবেন।

কবি,সাহিত্যিক শঙ্খ ঘোষ নজরুলের মৃত্যু নিয়ে লিখেছেন, নজরুলের কথা আজ যখনই মনে পড়ে আমাদের, মনে পড়ে মিলনগত এই অসম্পূর্ণতার কথা। আর তখন মনে হয়, বাক শক্তিহারা তাঁর অচেতন জীবনযাপন যেন আমাদের এই স্তম্ভিত ইতিহাসের এক নিবিড় প্রতীকচিহ্ন। যে সময়ে থেমে গেলো তার গান, তাঁর কথা, তাঁর অল্পকিছু আগেই তিনি গেয়েছিলেন, ‘ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবিরে, জাগায়োনা জাগায়োনা।’

রবীন্দ্রনাথকে উদ্দেশ্য করে তাঁর এই কথাগুলো নজরুলকেই ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে শঙ্খ ঘোষ বলেন, ‘তাঁর কথাগুলো আমরা যেন ফিরিয়ে দিতে পারি তাঁকেই, ‘যেন আমরাই ওগুলি বলছি নজরুলকে লক্ষ্য করে।’

নজরুলের সৃষ্টিকর্ম প্রসঙ্গে নজরুল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বাসসকে বলেন, নজরুল ইতিহাস ও সময় সচেতন মানুষ ছিলেন যার প্রভাব তাঁর লেখায় স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা, রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব আর ভারতবর্ষে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের তরঙ্গকে নজরুল তাঁর সাহিত্যে বিপুলভাবে ধারণ করেছেন। সেই সময়ে ধর্মান্ধ মানুষদের তিনি পুনর্জাগরণের ডাক দিয়েছেন এবং এক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল একজন বলিষ্ঠ নেতার মতো।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মাতা জাহেদা খাতুন।

বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।

প্রেম, দ্রোহ, সাম্যবাদ ও জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।

নজরুলের কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করে। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্বপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র

0

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের পাশাপাশি নিরাপত্তা অংশীদারত্বের সাফল্যকে বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরে আগ্রহী হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বছরের গোড়ার দিক থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়টি বিভিন্ন স্তরের আলোচনায় জোরের সঙ্গেই তুলছে। বাংলাদেশ এখনো এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে কী আছে, তা খোঁজ নিতে শুরু করেছে।
তবে কূটনীতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশের হুটহাট করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিতে সই করাটা ঠিক হবে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি কোনো অঙ্গীকার দেশের স্বার্থের জন্য কতটা লাভ বা ক্ষতি, সেটা ভেবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
ঢাকা ও ওয়াশিংটনে কর্মরত বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা সম্প্রতি এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, এ বছরের জানুয়ারি থেকে অস্ত্র বিক্রির প্রসঙ্গ তুলে বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক চুক্তির বিষয়টিকে সামনে এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে ওয়াশিংটনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তাবিষয়ক আলোচনায় আকসা আর জিসোমিয়া সইয়ের কথা তুলেছে।
নিরাপত্তা–সংক্রান্ত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, আকসা বা দ্য একুইজেশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট হচ্ছে সামরিক রসদবিষয়ক একটি রূপরেখা চুক্তি। মূলত সামরিক রসদ সরবরাহ, এ–সংক্রান্ত নানা ধরনের সেবা আর মেরামতের উপাদান রয়েছে এই চুক্তিতে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ২০০২ সালে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে চুক্তিটি সই করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
অন্যদিকে জিসোমিয়া (জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট) হচ্ছে মার্কিন সরকার ও মার্কিন সমরাস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সইকারী দেশের সরকার ও সমরাস্ত্রবিষয়ক বিশেষায়িত সংস্থার মধ্যে সম্পাদিত গোপন তথ্য বিনিময়ের চুক্তি। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যে চারটি সামরিক চুক্তি সই করেছে, তার মধ্যে এটি অন্যতম। ২০০২ সালে ভারতের সঙ্গে চুক্তিটি সই করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ঢাকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ১৩ এপ্রিল ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে আকসার প্রসঙ্গটি তুলেছেন। ঢাকায় গত ২ মে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সংলাপে আকসা ও জিসোমিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দুই চুক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, মে মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে ঢাকায় একটি বৈঠক হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টার এ বৈঠকে আকসা ও জিসোমিয়া নিয়ে আলোচনা হলেও মূলত আকসার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। ওই আলোচনায় আকসার খসড়া নিয়ে দুই পক্ষ কথা বলেছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চুক্তির খুঁটিনাটি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন কর্মকর্তারা তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আকসা সইয়ের আগ্রহ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান বলেন, ‘আমি মনে করি, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির (আইপিএস) কারণে এ অঞ্চলে প্রশিক্ষণ ও চলাচলের জন্য নিরাপদে রসদ সরবরাহের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্পষ্ট করে বললে আইপিএস বাস্তবায়নের জন্য এ অঞ্চলে রসদের সরবরাহ বাড়ানো প্রয়োজন। কারণ ভারত মহাসাগরে প্রশিক্ষণ আর দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতিতে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাবেক জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তা মনে করেন, চুক্তিটি করতে গিয়ে অন্য কারও স্বার্থে আঘাত হানতে পারে কি না, সেটা সতর্কতার সঙ্গে এবং ধীরেসুস্থে খেয়াল করতে হবে। বাংলাদেশ কৌশলগত দিক থেকে খুবই স্পর্শকাতর অঞ্চলে অবস্থিত। তাই বাংলাদেশের সব সময় ভারসাম্যমূলক কূটনীতির সম্পর্ক রাখা দরকার। এই চুক্তিতে একটি নির্দিষ্ট দেশের সৈন্যদের জন্য রসদ সরবরাহের বিষয়টি যুক্ত। আর্থিকভাবে এই চুক্তিতে কোনো ক্ষতি নেই। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্র যে দেশের সঙ্গে চুক্তিটি করে সেই দেশ ঋণ বা ইজারা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পায়। তবে চূড়ান্তভাবে এই চুক্তি বড় দেশ বা জোটের স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে যায় কি না, তা বিশেষভাবে দেখতে হবে।
১০ জুন ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত দুই দেশের অংশীদারত্ব সংলাপেও সামরিক চুক্তির প্রসঙ্গটি এসেছে বলে জানিয়েছে বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা। জানতে চাইলে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আকসা ও জিসোমিয়ার প্রসঙ্গগুলো আলোচনায় তুলেছে। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল ওই আলোচনায় বলেছে, এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব। এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নয়।
এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবীর বলেন, দীর্ঘমেয়াদি কোনো অঙ্গীকার দিয়ে চুক্তি করার বিষয়ে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় রাষ্ট্রের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তিতে ‘ফ্রি অব চয়েজে’র বিষয় থাকে। যা বৈদেশিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই দর–কষাকষির সময় জোরালো অবস্থানে থাকতে হবে। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই ভালো। নইলে আলোচনার প্রক্রিয়ায় যাঁরা থাকবেন, তাঁদের নৈর্ব্যক্তিকভাবে ও পেশাদারির সঙ্গে সেটা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বাংলাদেশের সঙ্গে সোফা বা স্ট্যাটাস অব ফোর্সেস অ্যাগ্রিমেন্ট প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত চুক্তিটি আর হয়নি। তখন ঢাকা ও ওয়াশিংটনে কর্মরত এবং চুক্তির আলোচনার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকা সাবেক দুই সরকারি কর্মকর্তা সম্প্রতি এই প্রতিবেদককে জানান, মূলত একটি জায়গায় এসে চুক্তি সই করা থেকে বাংলাদেশ সরে এসেছিল। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে অবারিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতিনিধি আর অস্ত্রের বাংলাদেশে প্রবেশাধিকার দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি আছে। যুক্তরাষ্ট্র কেন, কোনো দেশকেই এ ধরনের সুযোগ দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। এ আপত্তির কারণে শেষ পর্যন্ত চুক্তিটি সই হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ কে বলেন, এ ধরনের চুক্তি সই করতে যাওয়ার আগে তা যেন অন্য কোনো দেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়, সেটি বিবেচনায় নিতে হবে। বাংলাদেশের সামরিক সামর্থ্য, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়ানোর দিক থেকে এ ধরনের চুক্তি করতে কোনো সমস্যা নেই। তবে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেভাবে বাড়ছে সেখানে চুক্তির দরকষাকষির সময় বাংলাদেশের অবস্থান যেন জোরালো থাকে। এ জন্য পূর্বপ্রস্তুতি থাকাটা জরুরি।

ট্রাম্প-মোদি বৈঠক আজ, উঠতে পারে কাশ্মির প্রসঙ্গ

0

ফ্রান্সের বিয়ারিত্জ শহরে সোমবার জি-৭ সম্মেলনের সাইডলাইনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই নেতার আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পাশাপাশি কাশ্মির ইস্যু উঠে আসতে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। কেননা ইতোপূর্বে একাধিক বার কাশ্মির নিয়ে কথা বলেছেন ট্রাম্প। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পাশে বসিয়ে এ বিষয়ে মধ্যস্থতারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তবে ভারতের পক্ষ থেকে বরাবরই কাশ্মির নিয়ে যে কোনও মধ্যস্থতার প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।

২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে অঞ্চলটিকে দুই টুকরো করে দেয় দিল্লি। ওই দিন সকাল থেকে কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে নিমজ্জিত হয় দুনিয়ার ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মির উপত্যকা। ফোনে ট্রাম্পকে সামগ্রিক পরিস্থিতি জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একই ইস্যুতে ট্রাম্পকে ফোন করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নালিশ জানান। দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপের পর টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে তিনি কাশ্মিরের বর্তমান অবস্থাকে ‘একটি কঠিন পরিস্থিতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। পরদিন হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অঞ্চলটির বিদ্যমান অবস্থাকে ‘উত্তেজনাপূর্ণ’ হিসেবে উল্লেখ করেন ট্রাম্প।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কাশ্মির খুবই জটিল একটি জায়গা। সেখানে হিন্দু রয়েছে মুসলিমও রয়েছে। আমি বলতে পারি না যে তারা একসঙ্গে ভালো রয়েছে। সেখানে মধ্যস্থতা করতে আমি যতটুকু সম্ভব করবো। আপনারা দুটি দেশ, দীর্ঘ সময় ধরে একসঙ্গে এবং ঘনিষ্ঠভাবে থাকতে পারছেন না, এটা খুবই বিস্ফোরক পরিস্থিতি।’

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা বিষয়টিকে সাহায্য করছি। যেমনটা আপনারা জানেন, দুই দেশের মধ্যে প্রচণ্ড রকম সমস্যা রয়েছে। মধ্যস্থতা করতে আমি যতটা সম্ভব করবো অথবা কিছু তো করবো।’

এর আগে ইমরান খান ও নরেন্দ্র মোদি-র সঙ্গে ফোনালাপের পর টুইটারে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার দুই ভালো বন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে কথা হয়েছে। বাণিজ্য ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কাশ্মিরে উত্তেজনা হ্রাসে কাজ করার বিষয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে কথা হয়েছে। একটি কঠিন পরিস্থিতি, কিন্তু ভালো আলোচনা হয়েছে!’ সূত্র: জি নিউজ, রয়টার্স।

ইমরানের ‘নয়া পাকিস্তান’ কত দূর

0

চলতি সপ্তাহেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এক বছর পূর্ণ করলেন ইমরান খান। ‘নয়া পাকিস্তান’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসেন ইমরান। প্রতিশ্রুতিতে পাকিস্তানকে ‘কল্যাণমূলক ইসলামি রাষ্ট্র’ বানানোর কথাও বলেছিলেন তিনি। এক বছরে সেই লক্ষ্যের দিকে কতটা এগোলেন ইমরান? কী বলছে তাঁর জনগণ?

ইমরানের পথটা যে কঠিন হবে—সেটা আগেই জেনেছিলেন তিনি। বিশেষ করে দেশের অর্থনৈতিক সংকট যে মাথায় চেপে বসবে, সেটা জানাই ছিল। সেই অর্থনীতিকে টেনে তুলতে এই এক বছরে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো থেকে শুরু করে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন তিনি। সৌদি আরব, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কাতার ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ ১৬০০ কোটি ডলার ধার পেয়েছেন। বছর পূর্তির আগেই মন্ত্রিসভা পর্যন্ত পুনর্গঠন করেছেন। তারপরও বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে বশে আনতে পারেননি। যার প্রভাব টের পাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

করাচিতে অনলাইন ট্যাক্সি সার্ভিস প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মোহাম্মদ তারিক। সুদিনের আশায় ‘নয়া পাকিস্তান’ স্লোগানে মুগ্ধ হয়ে লাখো পাকিস্তানির মতো তিনিও ভোট দিয়েছিলেন ইমরানকে। এক বছরের মাথায় তাঁর কথায় প্রকাশ পেল স্বপ্ন ফিকে হওয়ার হতাশা। তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে তারিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ইমরানের কাছ থেকে অলৌকিক কিছু প্রত্যাশা করিনি। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে আমাদের জীবনযাত্রা একটু সহজ হওয়া উচিত ছিল।’ তারিকের মতে, এই এক বছরে পাকিস্তানের পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে। সবজি থেকে শুরু করে ওষুধ— সবকিছুর দাম বেড়েছে। প্রতিশ্রুতির বিপরীতে ইমরান সরকার গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়ামের দাম বাড়িয়েছে। সব মিলিয়ে আগের চেয়ে জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে উঠেছে।

বিপর্যস্ত অর্থনীতির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে। ছবি: রয়টার্স
বিপর্যস্ত অর্থনীতির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে। ছবি: রয়টার্স
ইমরান খানের নানা চেষ্টার পরও নিত্যপণ্যের দামে লাগাম টানা যায়নি। এ ছাড়া ডলারের বিপরীতে রুপির মান ৩০ শতাংশ নেমে গেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে, রাষ্ট্রীয় কোষাগার শূন্য, বাণিজ্য ঘাটতি ৩ হাজার ১০০ কোটি ডলারের ওপরে চলে গেছে। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদন বলছে, ইমরানের আগে নওয়াজ শরিফের সরকার পুরো পাঁচ বছরে যে ঋণ নিয়েছিলেন, ইমরান এক বছর পূর্ণ না হতেই তার দুই তৃতীয়াংশ ঋণ নিয়ে ফেলেছেন। সব মিলিয়ে এর প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায়।

রাজধানী ইসলামাবাদের বাসিন্দা ইমরান আলী (৩৫) পাকিস্তানের ডন অনলাইনকে বলেছেন, ‘গত এক বছরে নিত্যপণ্যের দাম ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আমার বেতন তো সেভাবে বাড়েনি। আমার মতো মানুষের জীবন চালানো কঠিন হয়ে উঠেছে।’ একটি বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে কাজ করা ইমরান আলীর বক্তব্য, ‘এই সরকার এক বছরে যতটুকু করার কথা ছিল, ততটুকুও করতে ব্যর্থ হয়েছে।’

পাকিস্তানের ডন অনলাইনের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইমরান তাঁর লক্ষ্য বাস্তবায়নে মোটা দাগে ৫১টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই এক বছরের মধ্যে তিনি একটি প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি পূরণ করেছেন। এই প্রতিশ্রুতি হলো, লুট হওয়া জাতীয় সম্পদ ফেরত পেতে টাস্ক ফোর্স গঠন। এই টাস্ক ফোর্স দুর্নীতি দমনেও কাজ করবে। বাকিগুলোর মধ্যে তিনটি আংশিক পূরণ হয়েছে, ৩২টি প্রতিশ্রুতি পূরণের কাজ চলছে। বাকি ১৫টির কাজ শুরু হয়নি।
যদিও যে প্রতিশ্রুতিটি পূরণ করেছেন, সেটির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সমালোচকেরা। দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে ইমরান তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করছেন বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও নওয়াজের দল থেকে নির্বাচিত আরেক প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসি কারাগারে আছেন। সর্বশেষ গ্রেপ্তার করা হয়েছে নওয়াজের মেয়ে মরিয়মকে। এর মধ্যে নওয়াজ শরিফ পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী দল পিএমএলের (এন) নেতা আর জারদারি তৃতীয় বৃহত্তম দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কো-চেয়ারম্যান। ইমরান অবশ্য সমালোচকদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এঁদের কারও বিরুদ্ধেই বর্তমান সরকারের আমলে মামলা করা হয়নি। আইন নিজস্ব গতিতেই চলছে।

ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ উঠেছে। আল জাজিরায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা নতুন নির্দেশনা জারি করে বলেছে কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত চলাকালে তাঁর কোনো বিষয় সংবাদে প্রকাশ করা যাবে না। সমালোচকেরা বলছেন, মূলত বিরোধী নেতাদের টার্গেট করেই এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি নানা অজুহাতে পাকিস্তানের তিনটি টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ইমরানের ক্ষমতার বছরপূর্তির প্রাক্কালে তাঁর জন্য এক ধরনের ধাক্কা হয়ে এসেছে কাশ্মীর ইস্যু। ভারত তার সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা বাতিল করেছে। রাজ্যকে ভেঙে দুই টুকরো করা হয়েছে এবং সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের শাসন চালু করেছে। ইমরান এই ইস্যুকে আন্তর্জাতিকীকরণের চেষ্টা করেছেন। এক ধরনের সফলতা পেয়েছেন তিনি। বন্ধুরাষ্ট্র চীনকে কাজে লাগিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠক বসাতে পেরেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাবও দেওয়াতে পেরেছেন ইমরান। একে তাঁর সমর্থকেরা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাঁর সফলতা বলে দাবি করতেই পারেন।

তবে বর্তমান পরিস্থিতি যেমনই হোক, ইমরান ‘নয়া পাকিস্তান’ গড়তে সক্ষম—এখনো এ আস্থা আছে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের অনেক ভক্তের। তেমনই একজন করাচির ইকতিদার শামিম। ইমরান সরকারের প্রথম বছরের পারফরম্যান্স যে সন্তোষজনক নয়, তা অবশ্য স্বীকার করেন তিনি। তবে নির্মাণ খাতের এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘ইমরান তাঁর আগের সরকারের ধারাবাহিকতায় বিপর্যস্ত এক অর্থনীতি পেয়েছেন। তিনি গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। পুরোপুরি দুর্যোগের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে এটা করতে হয়েছে।’ শামিম বলেন, তিনি নিশ্চিত এই সরকারের মেয়াদ দুই বছর শেষে ভালো পরিস্থিতির আভাস মিলবে।

ইকতিদার শামিমের এই আশাবাদ বাস্তব হবে কিনা, সেটা নির্ভর করবে ইমরান অর্থনীতিকে কীভাবে স্থিতিশীল অবস্থায় আনতে পারেন তার ওপর। করাচিভিত্তিক অর্থনীতিবিদ শহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেছেন, অর্থনৈতিক খাতের বিবেচনায় ইমরান সরকার গড়পড়তা পারফরমেন্সও দেখাতে পারেনি।

তার মানে ইমরানকে কল্যাণমূলক ইসলামি রাষ্ট্রের ‘নয়া পাকিস্তান’ গড়ার চ্যালেঞ্জে জিততে হলে গড়পড়তা নয়, অর্থনীতিতে ভালো পারফরমেন্স দেখাতে হবে। সেই লক্ষ্য পূরণে কাগজে-কলমে তাঁর হাতে আছে প্রায় চার বছর।