Home জাতীয় খালেদা ক্ষমতায় এসে স্বাস্থ্যসেবা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করেন

খালেদা ক্ষমতায় এসে স্বাস্থ্যসেবা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করেন

25
0
SHARE

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। এই সময়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক করবো সেই পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। প্রায় ১০ হাজারের মতো ক্লিনিক আমরা নির্মাণ করি এবং চার হাজার চালু করি। একবছরের মধ্যে এর সাফল্য পায় ৭০ ভাগ। মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। কারণ বিনা পয়সা সেখানে ওষুধ দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসতে পারেনি। তখন বিএনপি ক্ষমতা আসে। প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া, সাথে সাথে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেন। স্বাস্থ্যসেবা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করেন। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য।

রোববার (১২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে দ্বিতীয় জাতীয় কুষ্ঠ সম্মেলন-২০২৩ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর আমরা সরকার গঠন করি, জনগণের সেবার সুযোগ পাই। তখন থেকে আমাদের প্রচেষ্টায় এদেশের মানুষকে, বিশেষ করে তাদের স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, এটা জাতির পিতাই শুরু করেছিলেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যাতে প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে ওঠে, তার জন্য প্রাইভেট হাসপাতালের সব যন্ত্রপাতির ওপর ট্যাক্স, বিশেষ করে শিশুদের চিকিৎসার জন্য ট্যাক্স একেবারে শূন্য করে দেই। বেসরকারি উদ্যোক্তা যাতে সৃষ্টি হয় তাদের উৎসাহিত করি। তাদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা করে দেই। যার জন্য সারা বাংলাদেশে প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে উঠেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সারাটাজীবন আমার বাবা সংগ্রাম করেছিলেন। সে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারছি। তার সেই স্বপ্নপূরণে আমার একমাত্র লক্ষ্য।

তিনি বলেন, কুষ্ঠরোগ নির্মূল করা যে সম্ভব এই সম্মেলন মধ্য দিয়ে আমাদের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা আমরা সঞ্চয় করবো। আমরা কী কী কাজ করেছি সেগুলো প্রচার আমরা সুযোগ পাচ্ছি। প্রথমবার যখন আমরা সরকারে আসি তখন স্বাস্থ্যসেবার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেই।

সরকারপ্রধান বলেন, ৯৬ সালে সরকারে এসে বাংলাদেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করি। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নেই। তার কার্যক্রম শুরু করি।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আবার মানুষের স্বাস্থ্যসবার থেকে বিশেষ নজর দেই। এর ফলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করি। আমি ধন্যবাদ জানাই জাতিসংঘকে, জাতিসংঘের সকল সদস্য দেশ, তাদের সকলের সম্মতিতে কমিউনিটি ক্লিনিককে সার্বজনীক স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। চিন্তাটা সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব ছিল। এটা আমি নিজেই লিখেছিলাম। আমাদের স্বাস্থ্য সচিব ছিলেন মোহাম্মদ আলী সাহেব, তার বাড়ি নরসিংদী, আমি তাকে দিয়ে বলি যে আমার এ ধরনের একটা ধারণা আছে, এটা কার্যকর করা যায় কি না, যারা বিশেষজ্ঞ তাদের নিয়ে যাচাই করে দেখবেন। প্রায় ছয় মাসের ওপর তিনি এটা নিয়ে কাজ করেন। এটা নিয়ে আলোচনা হয়, তারপর আমরা এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সঙ্গে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সবগুলো থেকেই মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছি, সম্পূর্ণ বিনা পয়সা।

তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে আমরা পোলিও নির্মূল করেছি। মা ও শিশুর মৃত্যুহার আমরা হ্রাস করেছি। টিকাদানে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছি। টিকাদান কার্যক্রম সারাবিশ্বেই প্রশংসিত হয়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অনেক উন্নত দেশ হিমশিম খেয়েছে, আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে সেখানে আমরা যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি দেখেছি অনেক কুষ্ঠরোগী মাটিতে গড়িয়ে গড়িয়ে একটা সুর করে করে তারা ভিক্ষা চাইতে আসতো। যে কোনো অকেশনে তারা আমার কাছে আসতো। আমি তাদের কখনো অবহেলা করিনি। তারা এলে বসাতাম, খাবার দিতাম। টাকা দিয়েও সহযোগিতা করতাম। আমি তাদের কথা দিয়েছিলাম যে, সরকারে যেতে পারলে তাদের জন্য ব্যবস্থা করবো। সে ব্যবস্থাটা আমি করেছি। কারণ তারা এক ধরনের প্রতিবন্ধিত্ব জীবনযাপন করে। আমি সব স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার-নার্স, বিভাগ, সংস্থা, সেই সাথে সব নাগরিককে কুষ্ঠ আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবহেলা না করে, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল, আরও যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, এরা আমাদের সমাজের অংশ, পরিবারের অংশ, একটা বাচ্চা শিশু যদি হিজড়া বা প্রতিবন্ধী হয়- তার বাবা-মা ফেলে দিতে পারে না। ফেলে দেওয়া উচিত না। আমরা কেন ফেলে দেবো? তারা সম্পদেরও অংশীদার, এটা আমাদের ইসলাম ধর্মেও আছে। কুষ্ঠরোগ চিকিৎসা করলে ভালো

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, জাপানের নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইয়োহেই সাসাকাওয়া, স্বাস্থ্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।