Home আন্তর্জাতিক করোনাভাইরাসের কারণে নিউ ইয়র্কজুড়ে আতঙ্ক

করোনাভাইরাসের কারণে নিউ ইয়র্কজুড়ে আতঙ্ক

187
0
SHARE

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস যেভাবে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে তার ধাক্কা লেগেছে নিউ ইয়র্কেও। আতঙ্কিত মানুষ তাই বেশি করে খাবার সংগ্রহ করে রাখতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আরিফ মাহমুদ দৈনিক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বুঝতে পারছি না পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। মনের ভেতরে ভয়ও ঢুকে গেছে। তার উপর খাদ্য সংকট দেখা দিলে কি করব, এই ভেবে কিছু খাবার কিনে রাখছি।’

স্টেট অব ইমার্জেন্সি ঘোষণার আগে থেকেই মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল খাবার কিনে রাখার জন্য। তার উপর গতকাল শনিবার স্টেটের গভর্নর এন্ড্রু কুওমো জরুরি অবস্থা ঘোষণার সাথে সাথে অবস্থা আরো বদলে যায়। মানুষের মনে আতঙ্ক আরো বেড়ে গেছে। রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যেতে শুরু করে। তবে ভিড় ছিল খাবারের দোকানগুলোয়। মানুষজন বেশি করে খাবার ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে শুরু করায় অনেক দোকান ও সুপারস্টোর ফাঁকা হয়ে যেতে শুরু করেছে।

বিভিন্ন দেশের মতো করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর নিউ ইয়র্কেও। গতকাল শনিবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে এ স্টেটে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৮৯ জন। তাদের মধ্যে ১০ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বাকিদেরও আলাদা জায়গায় রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন গর্ভনর। কেবল নিউ ইয়র্ক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১০টি স্টেটে থাবা বসিয়েছে করোনাভাইরাস।

ভাইরাসটি নিয়ে ভয় আরো আতঙ্ক দেখা দিয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও। যে কারণে বিভিন্ন জনসমাগমস্থল তারা এড়িয়ে চলতে শুরু করেছেন। এমনকি অনেক আয়োজন বাতিলও করা হচ্ছে। স্কুলগুলো এখনো খোলা থাকলেও অনেককে বলতে শোনা গেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখাই ভালো হবে।

এদিকে ভাইরাসটি প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা দেখানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন নিউ ইয়র্কের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। নিউ ইয়র্কের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফেরদৌস খন্দকার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যেহেতু ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে খুব সহজে ছড়ায় এবং এর প্রতিষেধক কোনো ভ্যাকসিন নেই, তাই সতর্ক হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আক্রান্ত মানুষের সাহায্য এড়িয়ে চলতে হবে। পাবলিক প্লেসে চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্ষ করা পরিহার করা জরুরি।

অসুস্থ বোধ করলে বাড়িতে থাকার উপর জোর দিয়ে ডা. ফেরদৌস খন্দকার জানান, অনেক বেশি ধরা হয় এমন জায়গা যেমন-বাস ও ট্রেনের হাতল, লিফটের বাটন, পাবলিক টয়লেটের দরজা। সম্ভব হলে এসব জায়গা স্প্রে কিংবা ওয়াইপ দিয়ে মুছে নিতে হবে। সম্ভব হলে ওয়ান টাইম গ্লাভস ব্যবহার করার পরামর্শও দে তিনি।

এই মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, ‘অন্তত ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে ঠিকমতো হাত ধুতে হবে। সাবান না থাকলে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল রয়েছে, এমন হ্যান্ড সেনিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কার করতে হবে”।

ব্রুকলিন হাসপাতালের সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মুশফেকা মনসুর বলেন, ‘এরইমধ্যে নিউ ইয়র্কে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ এই স্টেটে বিভিন্ন দেশের মানুষ আসা-যাওয়া করছে। ফলে ভয়ের যথেষ্ঠ কারণ রয়েছে। কেননা এটি দ্রুত ছড়াচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এখানে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে ভাইরাসটি।’ এ থেকে মুক্ত থাকতে বিশেষ সতর্কতা নেয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।