নিম্ন আদালত, হাইকোর্ট বিভাগের একক বেঞ্চ, আপিল বিভাগে চেম্বারজজ আদালতের পর এবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ফুলবেঞ্চ বসছে। চারমাস বন্ধ থাকার পর আগামীকাল সোমবার থেকেই বসছে ভার্চুয়াল ফুল বেঞ্চ। এ আদালতে সশরীরে নয়, ভার্চুয়াল মাধ্যমেই শুনানি হবে। প্রতি সপ্তাহে দুইদিন (সোম ও বৃহস্পতিবার) বসছে আপিল বিভাগ। সর্বশেষ গত ১২ মার্চ বসেছিল আপিল বিভাগের ফুলবেঞ্চ। তবে তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় বিচারপতিরা স্বশরীরে এজলাসে বসেছিলেন।
এ বিষয়ে আজ রবিবার আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল আলম ভূঞার স্বাক্ষরে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রধান বিচারপতি দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস রোগ এর সংক্রমণ রোধকল্পে এবং শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০ এবং অত্র কোর্ট কর্তৃক প্রণীত প্র্যাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে শুধু ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালিত হবে মর্মে অনুমোদন প্রদান করেছেন।’ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল কোর্টে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সোয়া একটা পর্যন্ত শুনানি গ্রহণ করা হবে।’
গত ১৩ মার্চ থেকে সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয় অবকাশকালীন ছুটি। এই ছুটি শেষ হবার আগেই দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঘটে। এরকম প্রেক্ষাপটে গত ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে নিয়মিত আদালত বন্ধ। এ প্রেক্ষাপটে ভার্চুয়াল আদালত চালু করতে গত ৯ মে আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০ নামে গেজেট প্রকাশ করে। এই অধ্যাদেশের ক্ষমতাবলে ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করার মাধ্যমে আদালতকে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়। এর পরদিন ১০ মে সুপ্রিম কোর্টসহ সারাদেশে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার জন্য ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ এবং আইনজীবীদের জন্য ‘ভার্চুয়াল কোর্টরুম ম্যানুয়াল’ প্রকাশ করা হয়। এরপর ১১ মে থেকে ভার্চুয়াল আদালত কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে শুধুমাত্র সীমিত আকারে নির্দিষ্ট কিছু আদালতে জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। পরবর্তীতে ৩০ মে’র পর আদালতের সংখ্যা ও এখতিয়ার বাড়ানো হয়েছে। এরপর থেকে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতসহ সারাদেশে আদালতগুলোতে নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভার্চুয়ালি আপিল বিভাগ বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।