জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নয়, ঘাতকরা ৭৫-এর ১৫ আগস্ট একটি জাতিকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এ দেশের মাটি ও মানুষ দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে এশিয়ার সুইজারল্যান্ড বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আইডিইবি ভবনে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন: সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সব মানুষের হৃদয়ের নেতা ছিলেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর কাছে বারবার আবেদন-নিবেদন করেছেন বাঙালির ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য। এর বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার কারাগারে যেতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে অমানবিক নির্যাতন। তারপরেও অন্যায়ের কাছে কখনো মাথা নত করেননি তিনি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার দায় তৎকালীন চিপ আর্মি স্টাফসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা এড়াতে পারেন না। জাতির পিতার খুনের সঙ্গে জড়িত সবাইকে জনসমক্ষে আনতে হবে। জীবিতদের সঙ্গে সঙ্গে যারা মারা গেছেন তাদেরও বিচারের আওতায় এনে তাদের পরিচয় জাতির সামনে উন্মোচন করতে হবে।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বাঙালি জাতিকে দারিদ্র রেখে বিদেশিদের কাছে ভিক্ষা চাওয়ার অধিকার এ দেশের জনগণ কাউকে দেয়নি। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় থেকে এই কাজগুলোই করেছে। ৭৫-এর প্রেতাত্মারা মানুষকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করেছে। তাদের উত্তরসূরিরা এখন সেই অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বাংলার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ধ্বংসস্তূপ দেশকে পুনর্গঠন করে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে পথ নকশা তৈরি করে কাজ শুরু করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশে সব খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই উন্নয়নের ধারা বন্ধ হয়ে যায়। দেশে শুরু হয় বিভীষিকাময় অধ্যায়ের।
দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে হলে সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি জানান, কাউকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এই নীতি অনুসরণ করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আজ উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার বিকল্প নেই।
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আমাদের মাথাপিছু গড় আয় দরকার সাড়ে ১২ হাজার ডলার। বর্তমানে আয় হচ্ছে ২ হাজার ৫৫৪ ডলার।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সমস্যা সমাধান ও যৌক্তিক দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, কাজের কোয়ালিটি ঠিক রাখা, প্রজেক্টের টাইম লাইন মানা ও অযৌক্তিক অবকাঠামো নির্মাণ না করতে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিম্নমানের কাজের জন্য অনেককে বরখাস্ত করা হয়েছে। যেই অনিয়ম করবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ভালো কাজের জন্য পুরস্কার ও খারাপ কাজের জন্য তিরস্কার এই নীতি অনুসরণ করে মন্ত্রণালয়ে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. খবির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, আইডিবির সভাপতি এ কে এম এ হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান।