দেশে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আসা নিয়ে অস্থিরতা চলছে। যার প্রভাব পড়েছে রিজার্ভে। এরমধ্যে আশার কথা হলো অক্টোবর মাস থেকে নভেম্বর মাসে রেমিট্যান্স এসেছে কিছুটা বেশি। সদ্যবিদায়ী নভেম্বর মাসে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) ১৭ হাজার ৬৩ কোটি টাকার বেশি।
এর আগের মাস অর্থাৎ অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। এতে দেখা যায়, নভেম্বরে ৬ কোটি ৯৩ লাখ ডলার বেশি এসেছে। এছাড়া ২০২১ সালের নভেম্বরের দিকে তাকালে দেখা যায়, তখন ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। সে হিসাবে এবার একই মাসে ৪ কোটি ডলার বেশি এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) টানা ২ বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এরপর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে রেমিট্যান্স আসা আরও কমে। তখন দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরে আসে রেমিট্যান্স। তবে সবশেষ নভেম্বরে রেমিট্যান্স বেশি আসাকে ইতিবাচক বলছেন ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ কাজে আসছে। আবার কোন প্রবাসী নতুন করে দেশের বাইরে যেতে চাইলেও তাকে সরকারি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট (হিসাব) খুলতে হবে। এটা না খুললে তাকে ক্লিয়ারেন্স দেবে না এমন উদ্যোগ নিয়েছে বিএমইটি। সব মিলিয়ে আগামীতে আরও বেশি ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসবে এমনটাই বলছেন তারা।
এদিকে নভেম্বরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। আর বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১২৮ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৫২ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩ কোটি ২১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।
বরাবরের মতো নভেম্বরে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এ ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৮ কোটি ৭১ লাখ ডলার। আর রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৫৭ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। এছাড়া ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকে ৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স।
এদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এরপর আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, আর সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
এর আগে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। তার আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।