Home আইন আদালত নওগাঁয় নারীর মৃত্যুতে কারও দায় থাকলে ব্যবস্থা : র‌্যাব

নওগাঁয় নারীর মৃত্যুতে কারও দায় থাকলে ব্যবস্থা : র‌্যাব

30
0
SHARE

নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে থাকা অবস্থায় সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় বাহিনীর কারও দায় থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা।
তিনি বলেন, ওই নারীর মাথায় আঘাতের কোনো চিহ্ন থাকার বিষয়টি জানে না র‌্যাব। তদন্তে কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
র‌্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু ও র‌্যাব সদস্যদের কারও দায়িত্বে অবহেলা ছিল কি না, জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব এনামুল হকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে, ফেক আইডি ব্যবহারে তার নামে চাকরি দেওয়া ও বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রতারণার ঘটনা ঘটছিল। তিনি ২০২২ সালের মার্চে থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘একজন নারী তার নামে ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে প্রতারণা করছে অভিযোগে আদালতে মামলাও করেন। গত ১৯ ও ২০ মার্চ নিজ কার্যালয়ের সামনেই তার নাম ব্যবহার করে প্রতারক চক্র অর্থ প্রতারণা করে। এই খবর পেয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে প্রতারণায় আল-আমিন নামে একজনের যোগসাজশ রয়েছে। এরপর তিনি খবর পান জেসমিন নামে এক নারীর নাম।’
কমান্ডার মঈন বলেন বলেন, তিনি (এনামুল হক) অফিস যাওয়ার পথে র‌্যাবের টহল টিমকে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। এরপর তার সামনেই অভিযুক্ত নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় নারী সদস্যরা ছিলেন। সাক্ষী ছিলেন, অভিযোগকারী এনামুল হকও ছিলেন। সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় আটক জেসমিন অকপটে সব অভিযোগ স্বীকার করেন। তার মোবাইলে চলমান অবস্থায় এনামুল হকের নামে খোলা ফেক ফেসবুক আইডি দেখা যায়। তার মোবাইলে সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া যায়। যেখানে লাখ লাখ টাকা জমা রশিদের তথ্য পাওয়া যায়।
পরে সাক্ষীদের সামনে ওই নারীকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আটক করা হয় উল্লেখ করে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক বলেন, জব্দ আলামত নিয়ে একটি কম্পিউটারের দোকানে প্রিন্ট করা হয়। এরপর সেখান থেকে থানায় মামলার উদ্দেশে যাওয়ার পথে ওই নারী অসুস্থবোধ করেন। তখন র‌্যাব মামলার চেয়ে তাকে হাসপাতালে নেওয়াকেই অধিক গুরুত্ব দেয়।
কমান্ডার মঈন বলেন, র‌্যাব শুধু না, প্রত্যেকটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নারী ও শিশু অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সিরিয়াস। আমরা ওই নারীকে নওগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাই। তিনি গাড়ি থেকে নিজে নেমে হেঁটে হাসপাতালে ঢোকেন। তার আত্মীয়-স্বজন ও তার এসিল্যান্ডসহ ভূমি অফিসের তার সহকর্মীদের খবর দেওয়া হয়। সন্ধ্যার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্ট্রোক সন্দেহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই নারীকে স্থানান্তর করে। সেখানে সিটি স্ক্যানে স্ট্রোকের আলামত আসে। তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
কমান্ডার মঈন বলেন, ওই নারীর কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তা কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেছেন, ডেথ সার্টিফিকেটে তা উঠে এসেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে পারমিশন লাগে। ভুক্তভোগী যুগ্ম সচিব এনামুল হক অনুমতি সাপেক্ষে পরে থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
তিনি বলেন, যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, জেসমিন নামে ওই নারী র‌্যাব হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন, এখানে র‌্যাব সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে আমাদের ইনকোয়ারি সেল রয়েছে। ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্তে দেখা হচ্ছে কারো কোনো ধরনের অবহেলা, গাফিলতি বা যোগসাজশ কিংবা অনৈতিক কিছু ছিল কিনা! তদন্তে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে আগের মতো চাকরিচ্যুতিসহ কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।